করোনা ভাইরাস – আসুন ভীত না হয়ে সচেতন হই

সারাবিশ্ব যেন হঠাৎ করে থমকে গিয়েছে। আতঙ্ক করোনা ভাইরাস, রূপ নিয়েছে এক মহামারীতে। করোনা ভাইরাস এর মত সমগোত্রীয় অন্যান্য ভাইরাসে মৃত্যুর হার বেশি হলেও করোনা ভাইরাসের মৃত্যুর হার কম।

ভয়াবহতার মূল কারণ হচ্ছে সংক্রমণ। কোনভাবেই কমানো যাচ্ছে সংক্রমণের ঝুঁকি। সংক্রমিত কোন ব্যক্তির কাছ থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে সহজেই ঢুকে যাচ্ছে এই ভাইরাসটি আর এভাবেই এক ব্যক্তি থেকে পরিবার, পরিবার পরিবার থেকে প্রতিবেশী, প্রতিবেশী থেকে একটি এলাকা আর একটি এলাকা থেকে একটি বিশাল অঞ্চল সংক্রমিত হচ্ছে খুব সহজেই।

বিভিন্ন তথ্য মতে এই সংক্রমণের বড় একটি কারণ হচ্ছে এই ভাইরাসের ধরণ। কেউ সংক্রমিত হলে তার লক্ষণ প্রকাশ পেতে সময় লেগে যায় বেশ কয়েকদিন। তাই প্রতিরোধ করার উপায়টা জানা থাকলেও দেরি হয়ে যায় অনেকাংশেই আর সেই সাথে রয়েছে অনেকটাই আমাদের নিজেদের অসচেতনতা।

যেহেতু এই ভাইরাসটির এখনো কোন প্রকার প্রতিষেধক বের হয়নি তাই এটাকে প্রতিরোধ আমাদের নিজেদেরই করতে হবে। আমাদের সচেতনতাই পারে এই ভাইরাস থেকে আমাদেরকে বাঁচাতে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ ছাড়াও প্রতিটি দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ এই ভাইরাস থেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা প্রচার করে আসছে। সেই সকল নির্দেশনা মেনে চললেই কিন্তু আমরা এই ভাইরাস থেকে অনেকাংশেই আমাদেরকে রক্ষা করতে পারব।

করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে :

যথাসম্ভব জনসমাগম হয় এমন স্থানগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। জোর দিতে হবে নিজের ও পরিবারের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর। যেহেতু এই ভাইরাসটির চোখ নাক এবং মুখের মাধ্যমে শরীরে বেশি প্রবেশ করে তাই অপরিষ্কার বা অপরিচ্ছন্ন হাত দিয়ে চোখ নাক মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সব সময় মাস্ক ব্যবহার করে চলাফেরা করা উত্তম যদিও এই ব্যাপারে বেশ কয়েকটি মতামত পাওয়া যায়। সেই সাথে হাতে গ্লাভস পরলে সংক্রমণের ঝুঁকি টা কিছুটা হলেও কমবে। সাবান বা জীবাণুনাশক দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়ার চেষ্টা করুন এবং হাত ধোয়ার সময় কমপক্ষে ৩০ সেকেন্ডের বেশি সময় নিন।

হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু ব্যবহার করা উত্তম। এতে করে আপনার কাছ থেকে অন্যরা নিরাপদ থাকবে। আপনি যদি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এলাকা বা ব্যক্তির সংস্পর্শে থেকে থাকেন এবং সুস্থ থাকেন তাহলে আপনার উচিত হবে এটা নিশ্চিত হওয়া যে আপনিও একই ভাইরাসে আক্রান্ত নন এবং আপনার মাধ্যমে যেন এই ভাইরাসটি অন্যের মাধ্যমে ছড়াতে না পারে। আর এই জন্য আপনার স্বাস্থ্য কর্মীর কাছ থেকে পাওয়া নির্দেশনা গুলি মেনে চলতে হবে। মনে রাখতে হবে আপনার সচেতনতা অন্যের জীবন বাঁচাতে সক্ষম।

ভাইরাসের লক্ষণ আপনার মধ্যে প্রকাশ পেলে যেমন হাঁচি-কাশি সাথে জ্বর মাথাব্যথা এবং মাংসপেশিতে ব্যথা এই সমস্ত দেখা গেলে খুব দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

একটি বিষয় যদি খেয়াল করেন তাহলে দেখা যায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের অধিকাংশই বৃদ্ধ। তরুণ এবং শিশুদের মৃত্যুবরণ করার হার একেবারেই কম। এর পিছনে যে কারণটি ব্যাখ্যা করা হচ্ছে তা হল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাই খাদ্য তালিকায় এমন সব খাবার রাখার চেষ্টা করুন যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে।

এছাড়া প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সংস্থা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করার ব্যাপারে বিভিন্ন রকম প্রচার প্রচারণা করে যাচ্ছে যেগুলো মেনে চললে এই ভাইরাসের প্রকোপ থেকে আমরা আমাদের নিজেদেরকে এবং পরিবারকে এবং সেই সাথে সমাজ ও দেশকে রক্ষা করতে পারবো।

তাই আসুন ভীত না হয়ে সচেতন হই আপনার এবং আমার সচেতনতাই পারবে এই ভাইরাসের প্রকোপ হতে এই বিশ্বকে রক্ষা করতে।